লোহাগাড়া (চট্রগ্রাম) প্রতিনিধি :::
লোহাগাড়ায় প্রতিদিন পরিবেশে মারাত্মক বিপর্যয় ঘটে চলেছে। এলাকাবাসীরা অভিযোগ করেছেন দেন–দরবার করেও তারা কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। খবরদারী–নজরদারী সংস্থার লোকজন রহস্যজনক কারণে নীরবতা পালন করছেন। আর প্রভাবশালীরা ক্ষমতাসীন দলের দাপটে এসব করে চলছেন। এলাকাবাসীরা পরিবেশের বিপর্যয় রোধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তারা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, নির্বিচারে পাহাড় কাটা, অবৈধ বালু উত্তোলন, ফসলী জমির উর্বর মাটি কেটে নেয়া, গাছ–গাছালি নিধন পরিবেশ বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ। জানা যায়, রাজনৈতিক পৃষ্টপোষকতায় রাতের আঁধারেই পাহাড়–টিলা কেটে নেয়া হয়। উপজেলার চুনতি, চরম্বা, পুটিবিলা, বড়হাতিয়া প্রভৃতিস্থানে নিষেধ অমান্য করে পাহাড় কাটা হয়। হচ্ছে। বিধান রয়েছে ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড় কাটা নিষেধ। কিন্তু পাহাড় খেকোরা ডলু বনবিটের উঁচু পাহাড় পর্যন্ত সাবাড় করে ফেলেছে। কিছুদিন আগে বনবিভাগের লোকজন পাহাড় কাটার সময় সরঞ্জামসহ কয়েক ব্যক্তিকে আটক করেছিল। কিন্তু প্রভাবশালীদের চাপের মুখে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এমন অভিযোগ এন্তার। বালু মহালের কথায় ধরা যাক। উপজেলার ডলু, হাঙ্গর, টংকাবতী, হাতিয়া, সরই প্রভৃতি এলাকায় বৈধ–অবৈধ অনধিক ৪০টি স্থান থেকে বালু উত্তোলন করা হয়। উত্তোলিত বালু সড়ক পথে চালানের সময় রাজনৈতিক পৃষ্ঠপাষকতায় চাঁদা আদায় করা হয়। ডলু খালে মেশিন বসিয়ে বালু তোলা হয়। এ দৃশ্য দেখতে বেশিদূর যেতে হবে না। হরিণা মিয়া পাড়াতেই প্রভাবশালীরা প্রকাশ্যে এ অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। আধুনগরের তহশিলদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এলাকার ফসলী জমির ৬ ইঞ্চি মাটি প্রকাশ্যে কেটে নেয়া হয়। লোহাগাড়া থানার সন্নিহিত স্থানে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রভাবশালীরা মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন।
অভিযোগ উঠেছে তারা এ ব্যবসা চালাতে খবরদারী নজরদারী সংস্থাকে হারাহারি টাকা দিয়ে থাকেন। চুনতি অভয়ারণ্য এলাকায় লোকবসতি ও জন উপদ্রবে পশু–পাখিরা আবাসস্থল হারাচ্ছে। ঝাড়ফুল ও বাঁশঝাড় না থাকায় হাতিরা খাদ্যের অভাবে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে। বন বিভাগের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তারা মাসোহারা নিয়ে লোকবসতি স্থাপনে উৎসাহ দিচ্ছে। পান বরজ বসাচ্ছে। প্রতিদিন ডলু, হাঙ্গর, টংকাবতী প্রভৃতি সংরক্ষিত বনাঞ্চল হতে রাতে ট্রাকভর্তি জ্বালানী কাঠ পাচার হয়। কাঠ পাচারের সময়ে নির্দিষ্ট স্থানে বনবিভাগের লোকজন টংঘর বানিয়ে টাকা আদায় করে। কলাউজানের গাবগুলাতলী, টংকাবতী বিট সংযোগস্থল পদুয়া ঠাকুরদিঘী, জঙ্গল পদুয়া প্রভৃতিস্থানে টংঘর রয়েছে। সার্বিকভাবে এ সমস্যা দিন দিন প্রকট আকার ধারণ করছে। এলাকার পরিবেশবাদীরা অনতিবিলম্বে ব্যবস্থা নিয়ে পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
পাঠকের মতামত: